রাত পোহালেই দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোট বর্জনকারী এ দলগুলো ভোটের আগের দিন থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালেরও ডাক দিয়েছে। ভোটের আগে ট্রেন, বাসসহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নওগাঁ-২ আসনের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যু হলে বিধি অনুযায়ী আসনটির ভোট স্থগিত করেছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন শনিবার (৬ই জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে ব্রিফিং করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সেখানে গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং স্বচ্ছতামূলক নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। বিএনপি ও সমমনাদের ভোটবর্জনের প্রসঙ্গ টেনে  সিইসি বলেছেন, কোনও একটা বিরোধী পক্ষ ভোট বর্জনের পাশাপাশি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। এতে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে উঠিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছুটা সংকট দেখা দিতে পারে। তবে আশা করি, বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও জনগণের অংশগ্রহণে ও ভোটারদের আগমনে নির্বাচন উঠে আসবে। বিএনপি-জামায়াতের গুজব ও প্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণকে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রে এসে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা অংশ নিলেও দলীয় প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে। ২২৫টির মতো আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। স্বতন্ত্রদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত। তাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন জেলা- উপজেলা পর্যায়ের পদধারী, রয়েছেন বর্তমান সংসদের এমপি।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনি ভোটের মাঠের নিয়ন্ত্রণ এখন আয়োজক সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশনের হাতে। ইসির নির্দেশে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে সারা দেশ। এই মুহূর্তে মাঠ এখন জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দখলে। শনিবার সারা দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ব্যালট পেপার বাদে বাকি সব নির্বাচনি সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এসব নির্বাচনি সামগ্রী নিয়ে প্রিজাইডিং অফিসাররা নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্র প্রস্তুত করছেন। ভোটকেন্দ্রেই তারা রাতে অবস্থান করবেন। ভোরে সেখান থেকে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করবেন। এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সকাল বেলা ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হচ্ছে। দুর্গম কিছু কেন্দ্র বাদে সব কেন্দ্রের ব্যালট পেপারই রবিবার সকালে বিরতণ করা হবে। দুর্গম দুই হাজার ৯৭১টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার শনিবারই বিতরণ করা হয়েছে।